Skip to main content

ডিটেকটিভ এন্ড মিস লিলি | দ্বিতীয় পর্ব | The Detective and Miss Lily | Episode 2




মোঃ জাহিদুল ইসলাম রিতন 



---দ্বিতীয় পর্ব---

 সুরেলা গলায় যুবতী হেসে উঠল । রায়হান হঠাৎ জেগে উঠল যেন । এতক্ষণের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে । গম্ভীর এবং রুক্ষকন্ঠে বললো, “বুঝেছি, আপনি আমায় নিয়ে তামাসা করছেন । মজা করার জন্যেই এসেছেন !”

“---না না, আমি মোটেই তামাসা করছি না মিঃ রশিদ ।”
আপনার সমস্যাটা বললেন না তো ?”
“এই আমার কার্ড রইলো । সন্ধ্যের পরেই আপনি আমার বাড়ি যাবেন, সেখানেই কথাটা হবে ।”
“কোথায় আপনার বাড়ী ?”
“কার্ডেই রয়েছে ঠিকানাটা ।”   প্রথম পর্ব লিংক 
যুবতী এগিয়ে গেল দরজার দিকে । রায়হানও তার সঙ্গে নীচে নেমে এল । যুবতী রাস্তার ও-পাশে একটা গাড়ীতে গিয়ে উঠতেই গাড়ীটা স্টার্ট দিল । আর সদর দরজায় এসে আশ্চর্য হয়ে রায়হান দেখলো, হালফিল মডেলের ঝক ঝকে একটা শেভ্রলে গাড়ী দাঁড়িয়ে আছে সিঁড়ির কাছেই !  

নতুন গাড়ীটা মিসেস আলীও দেখলেন । সদর দরজার কাছেই দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বাড়ীউলী ।
রায়হান বলল, “দেখলেন, আমার জন্যে আস্ত একটা শেভ্রেল । কেউ বিশ্বাস করবে
“আনকোরা টাটকা নতুন একটা গাড়ী......তারপর এই পঞ্চাশ হাজার টাকা ।”
রাতের অন্ধকার নেমে আসছে । রায়হান তার অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে এল । কী বলছিল মেয়েটি, এটা এক গর্ত ! এই গর্ত থেকে সরে পড়া দরকার তার । রমেশের ওই বারটাও তো একটা গর্ত—শেয়ালের গর্ত! এই দুই গর্ত থেকে বোধ হয় মুক্তি পেয়ে এবার উড়ে পালাবে সে ।
কে জানে, ওই হলুদ পোশাকের সোনালী চুলের যুবতী তাকে নিয়ে কোন মারাত্বক সর্বনাশে খেলায় মেতে উঠতে চাইছে কিনা ।
যুবতির বয়স কত হতে পারে ? মধ্যে-চিড়-খেয়ে লম্বা ফাটল ধরা আয়নার দিকে তাকাল রায়হান । সে কী বুড়িয়ে গেছে ? সত্যিই তো, এমন উস্কোখুস্কো চুলে ভরে গেছে মাথাটা, সেই সঙ্গে দু-দিনের না কামানো দাড়িতে গালটা নোংরা হয়ে আছে-তবুও বত্রিশ বছরের রায়হান কে কেউ চল্লিশ বছরের বুড়া বলে ভাবতে সাহস পাবে না
কারণ, এই বিচ্ছিরী পোশাকের আড়ালে যে চেহারাটা রয়েছে সেটা ইস্পাতের মতন শক্ত আর নদীর ঢেউয়ের মতই দুর্বার তার পেশী গুলো ।
যুবতীর বয়স কত হতে পারে ? সাতাশ হতে পারে । কিংবা হয়তো তার চেয়ে কম ।
কার্ডে লেখা আছেঃ “মেরিলিন লিলি ।কুঁড়ে ঘর, ফতুল্লাহ, না-গঞ্জ । 
যুবতীর নাম তাহলে মেরিলিন । পদবী জার্মান । শহরতলী ছাড়িয়ে হাইওয়ে দিয়ে গেলেই নদী পার হলেই না-গঞ্জ পরেই ফতুল্লাহ এই যুবতী তাহলে ধনী আর অবিবাহিতা । রায়হান আর দেরী না করে নেমে এলো নীচে ।
চেচিয়ে ডাকলো মিসেস আলীকে । মিসেস আলী ছুটে এলেন ।
রায়হান তখন পকেট থেকে এক গোছা নোট বের করে একটু তারিক্কী গলায় চালে বলল, “এই নিন  আপনার গত বছরের ভাড়ার টাকাটা, সেই সঙ্গে এ বছরটা এবং আগামী বছরেরটাও ।”
“বাকী যা থাকবে তা দিয়ে সুন্দর কিছু পোশাক কিনে এনে নিজেকে আরও সুন্দরী করে তুলবেন ।”
“এতো টাকা- তো আমি যে এতো ঠাট্টা করেছি, সে জন্যে রাগ করেননি তো ?”
“মোটেই না । আচ্ছা, চলি ।”
গাড়ী চালিয়ে বড় রাস্তায় বেরিয়ে এলো রায়হান । সেলুনে গিয়ে চুল কেটে, নতুন পোশাক কিনে নিয়ে রেডি হয়ে বেরোতে ঘন্টা দেড়েকের মতন লাগবে ফতুল্লায় পৌছুতে ঘন্টা দু-য়েক লাগার কথা ।  শীতের পর প্রথম বসন্ত নেমেছে । শিশির ভিজে গেছে পথঘাট, সেই সঙ্গে মিহি তুষারের গুঁড়ো ।
বনানী গুলশান হয়ে গাড়ী চালিয়ে যেতে ভালোই লাগছে রায়হানের । পথ চলতে এত আবেগ এত উত্তেজনা ! “ব্রাদার”! আপন মনে সে বলল, “একেই বলে জীবন । কেন আমি আগে এমনি একটা মোটর গাড়ীর মালিক হবার চেষ্টা করিনি? কেন ? আমার, এত টাকা ছিল না ! কিন্তু এখন –মনে হচ্ছে, এমন কিছু একটা আমার দ্বারা সম্ভব, যাতে আমি বড়লোক হতে পারি ............কিন্তু কথাটা হচ্ছে এই যে ব্রাদার, জীবনে কোন কিছুই সহজ পথে আসে না, এবং টাকাটা যদি সৎভাবে এসে পড়ে, তাহলে কোন অভিযোগই থাকবে না আমার” ।
খুব অন্যমনষ্ক ছিল রায়হান । একটা সাইরেনের শব্দ কানে এসে থমকে আছড়ে পড়তেই সে চমকে ঘাড় ফেরাল । দেখল, তার পাশে পাশে চলছে মোটর-সাইকেল আরোহী এক ট্রাফিক পুলিশ অফিসার ।
গাড়ী থামালেন রায়হান ।
“এতো জোড়ে গাড়ী চালান কেন ? এর জন্য বেশ কিছু গচ্ছা যাবে আপনার ! এবার দেখি লাইসেন্সটা--”
“অফিসার আমি দুঃখিত ! আমি বিয়ে করতে যাচ্ছিলাম বলেই অন্যমনষ্ক ছিলাম !”
“বিয়ে করে চলেছেন?” অফিসার যেন চমকে উঠলো, “ঠিক আছে, ওইটেই আপনার শাস্তির ব্যবস্তা হয়ে গেলো ! এবারের মতন আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছি, কিন্তু দেখবেন ভবিষত্যে এরপর ঘন ঘন বিয়ে করতে স্পীডে গাড়ী চালাবেন না !”
সেলুন থেকে বের হয়ে এসে রায়হান জিনিসপত্র কেনাকাটায়র ব্যপারে বেশী সময় নষ্ট করলো না । জেন্টস আউটফিটার্স থেকে সেজে গুজে যখন বের হয়ে এল, তখন তার চেহারার আদল বদলে গেছে । সুন্দর সাজ-পোশাকের স্মার্ট এক পুরুষ ।
সে হাতের ঘড়িতে সময় দেখল । আটটা বাজতে এখনও কুড়ি মিনিট বাকী আছে ।
ফতুল্লায় নয়টার মধ্যেই পৌছতে পারবে । মেয়েটির কী নাম যেন ? মেরিলিন লিলি । রায়হান গাড়ীতে উঠে স্টার্ট দিল । হাইওয়ে ধরে ছুটে চলল তার গাড়ী ।
ফতুল্লার ক্রিকেট স্টেডিয়াম চখে পড়লো । জায়গাটা সুন্দর রাতের অন্ধকারেও তা ফুটে উঠছে । দুধারে সারি সারি ধনীদের প্রসাদ ।
ব্ল্যাম!!! ফয়ুল্লাহ ঢুকতেই রায়হানের গাড়ী যেন হোঁচট খেল । ব্ল্যাম শব্দের প্রচন্ড আওয়াজে একটা বুলেট এসে উইন্ডস্ক্রীনের কাঁচ ভেঙ্গে তার মাথার টুপিটা উড়িয়ে নিয়ে গেল
না, এটা কোন পপ গান নয় !!! রায়হান মনে মনে ভাবলো ।
“টাকাটা পাওয়ার মজাটা শুরু হল বোধ হয় ।”
আর তারপরই শুনতে পেল; তীব্র শব্দ করে তার পেছনে একটা মোটর-বাইক এসে দাঁড়াল । আবার ট্রাফিক অফিসার নয়তো ? রায়হান তীব্র বেগে গাড়ী ছোটাল । কিন্তু মোটর-বাইক তাকে ওভার-টেক করে সামনাসামনি এসে পথ আটকে থামলো ।
রাতের অন্ধকারে ভালো করে কিছু দেখা যায়না । শিশির আর কুয়াশাঅল্প অল্প জোৎস্নার আলো চারদিকে । রায়হান মুখ বাড়িয়ে দেখল, মোটর সাইকেলে বসা আছে বিশ্রি চেহারার একটা লোক- তার গালের একটা দিকে শুকনো কাটার দাগ । দেখে মনে হচ্ছে, লোকটার গায়ে প্রচন্ড জর আছে ।
লোকটার মুখে খল হাসি, চোখদুটো জ্বলছে । কিন্তু এতো ট্রাফিক পুলিশ নয় ফতুল্লায় ইউ টার্ন নিতে গিয়ে রায়হান ট্রাফিকের কোন আইন ভাঙ্গেনি ।
“এই মাত্র গুলির শব্দ কানে এল । ফতুল্লায় তো বন নেই যে শিকার করবে তা থাকলেও নিষেধ আছে” । -আপন মনে বলল রায়হান ।
“কিন্তু গুলিটা এসে আমার মাথার টুপিটা উড়িয়ে নিল কেন ?” গম্ভীর হয়ে রায়হান জিজ্ঞাসা করল ।
সঙ্গে সঙ্গে তার চোখ পড়ল লোকটার পেছনের দিকে । সেখানে একটা রাইফেল বাঁধা রয়েছে কেরিয়ারে । নীলচে নল চকচক করছে জ্যোৎস্নায় ।
 একটি বিশ্রী শব্দ করে হেসে উঠল লোকটা । -তাহলে এটা নিশ্চয় তোমার কাজ?” –বলেই রায়হান দরজা খুলে লাফিয়ে পড়ল গাড়ী থেকে । তারপর লোকটাকে রাইফেল তুলার অবকাশ না দিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়ল তার উপর । লোকটা রাইফেল তুলে নিতেই রায়হানের প্রচন্ড ঘুঁসি খেয়ে ছিটকে পড়ল রাস্তার উপরে । রায়হান সঙ্গে সঙ্গে রাইফেলটা ছিনিয়ে নিয়ে এক ধারে সরে দাঁড়ালো ।
জ্যোৎস্না এবার স্পষ্ট ।
“এসব কী  ? কী মতলব নিয়ে গুলি ছুঁড়েছিলে তুমি ?”
“না, কোন খারাপ মতলব নিয়ে নয় । শুধু আপনার দিক দিয়ে প্রকিক্রিয়াটা কেমন হয়, সেটা দেখার জন্যই আমি গুলি করেছি ।
আসুন, জনাব রশিদ, লেডী লিলি অপেক্ষা করে আছেন আপনার জন্য !”
লোকটার পেছন পেছন রায়হান এগিয়ে গেল খানিকটা । একসারি গাছের আড়ালে অস্পষ্ট এক নারী-মূর্তি ! একটু এগোতেই রায়হান চিনতে পারল । মেরেলিন লিলি দাঁড়িয়ে আছে একটা গাছের আড়ালে । এই লোকটা তাহলে এই রমণীরই কোব অনুচর ! তার শক্তি পরীক্ষার জন্যই মেরিলিন লোকটাকে পাঠিয়েছিল তাকে খুটিয়ে দেখকে ।
মেরিলিন এগিয়ে এল । বলল, “আসুন মিঃ রশিদ” ।
“এই লোকটা আমার মাথার টুপিটা গুলি করে উড়িয়ে দিয়েছে । এটা কেমন ধরনের অভ্যার্থনা ?”
“আপনি তাহলে একটা টুপির দাম আমার কাছে পাবেন ?” শুধু টুপি.........?
বুলেটটা আমার কপাল ফুটো করেও বেরিয়ে যেতে পারতো তো ?
“তা পারতো ! অবশ্য রকি যদি চাইতো । আসুন মিঃ রশিদ” । বলেই মেরিলিন গাছের সারির ছায়ার ভেতরে চলতে শুরু করল ।
রায়হান তাকে অনুসরণ করল । কার্ডে লেখা ছিল, কুঁড়ে ঘর ফতুল্লা, না-গঞ্জ ।
মেরিলিন একটি জাগায় দাঁড়িয়ে আঙুল বাড়িয়ে বাড়ীটা দেখাল ।
“কুঁড়ে ঘরটা চমৎকার তো?” আপনার বাড়ী তো ?”
“হ্যা । বাড়ীটা ছিল আমার স্বামীর ।”
(মনে মনে রায়হান একটা ধাঁক্কা খেলো মিস লিলি নয় মিসেস লিলি) স্বামীর ছিল বলতে কী বোঝাচ্ছেন ? এখন উনি কোথায় ?”
“ভেতরে চলুন-সবই জানতে পারবেন ।” ভেতরে ঢুকে রায়হান দেখে, বাড়ীর প্রতিটা ঘর, বারান্দা, হল ঘর সবই সৌন্দয্য আর ঐশ্বর্য দিয়ে গড়া । সে মেরিলিনের পিছু পিছু একটা ঘরে এসে বসল । তারপর বেশ কিছুক্ষণ একা বসে রইল । কী যে ঘটতে চলেছে, সে কিছুই আন্দাজ করতে পারছে না । একটি পরিচারিকা এসে মদ আর খাবার রেখে গেল । রায়হান কোন খাবারেই পছন্দ হলো না, কারণ মদ সে খায় না বীয়ার হলে ঠিক তাও আবার জোলো বিয়ার খেয়ে অভ্যাস্ত যে । একটু পরই মেরিলিন এসে বসল একটা সোফায় । মেরিলিন বোতলের ছিতি খুলে দুটো গেলাসে মদ ঢালতে লাগল ।
“এবার বলবেন কী, কী জন্যে আপনি আমায় এখানে ডেকে এনেছেন ?”
“বলব, আগে খেয়ে নিন ।”
“ধন্যবাদ, আমি মদ খাইনা” প্লিস কন্টিনিউ......
মেরিলিন বলল, “বছর দুই আগের কথা । একজন নাজি জার্মান সেনাপতি, নাম ফ্রিজ মেইনস্টেইন, যিনি যুদ্ধের সময়ে নাজি জার্মান গেষ্টাপো-বাহিনীতে ছিলেন, হঠাৎ জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ভারত-এ আস্রয় নেন পরে এখানে আসেন । যুদ্ধাপরাধী হিসাবে প্রায় বিশ বছরের মতন বন্দী ছিলেন ।
জেল থেকে মুক্তি পেয়ে হঠাৎ ফ্রিজ যখন বাংলাদেশে এসে হাজির হলেন, তখন ওর বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি । ওই ফ্রিজ মেইনস্টেইনকেই আমি বিয়ে করি । এই বাড়ী বা কুড়ে ঘর ফ্রিজই কিনেছিলেন এবং বিয়ের পর এখানেই চলে আসি আমি । দেড়টা বছর বেশ সুখে-শান্তিতেই কাটল আমাদের-বয়সের পার্থক্য আমাদের দাম্পত্য-জীবনে কোন অসুবিধারই কারণ হয় নি । ফ্রিজ ছিলেন আমার চেয়ে পঁচিশ বছরের মতন বড়, কিন্তু শক্তি-সামর্থ্যের দিক থেকে তিনি ছিলেন যুবুকের মতোই ।
    ফ্রিজ ছিলেন একটু অদ্ভুত চরিত্রের মানুষ । একদিন রাতে শুতে যাবার সময় ফ্রিজ হঠাৎ বললেন-
    ‘কেউ একজন, জানিনা, সে কে হতে পারে , আমায় খুন করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে গোপনে । যুদ্ধের সময় মিউনিখে নাজি জেনারেল জিমারম্যান তার বন্দীদের কাছ থেকে ধনরত্ন কেড়ে নিয়ে বিশাল এক গুপ্তধন ভান্ডার গড়েছিলেন । আর সে গুপ্তধনে আমারও অংশ ছিল ।”
    “কিন্তু তুমি কি করেছিলে, যার জন্যে তোমার অংশীদার ক্রা হয়েছিল ?
‘কিছুই করেনি । আমি তখন জার্মান বাহিনীর সঙ্গে ফ্রন্টে লড়াই করছি ।’
মার্কিন জেনারেল প্যাটনের ট্যাঙ্কবাহিনী তখন ঢুকে পড়েছে জার্মান সীমান্তে । আমারা তাদের বাধা দেবার জন্য যুদ্ধ করে যাচ্ছি । ঠিক সেই সময় জেনারেল জিমারম্যান ডেকে পাঠালেন আমায় তার সদর-দফতরে –
--“কর্ণেল মেইনস্টেইন রিপোর্ট দিচ্ছি !” হাত তুলে লম্বা কুর্ণিশ করে জেনারেলকে বললাম । উনি পরকলার ফাঁক দিয়ে দেখলেন আমাকে । সেখানে আর কেউ ছিল না । জেনারেল বললেন, ‘কর্ণেল ! এই যুদ্ধে আমরা হেরে যাবো.........কিন্তু আমি একটা গোপন ব্যবস্থা করে রেখেছি ! সে কথাই বলছি তোমায় ।’
    জেনারেল দেয়ালে টাঙ্গানো জার্মানির একটা মানচিত্রের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ খুটিয়ে খুটিয়ে কি দেখলেন । তারপর ম্যাপের গায়ে হাতের ছড়িটা বোলাতে বোলাতে বললেন- “ওই খানটারই মাঝামাঝি, --শোন, কর্ণেল মেইনস্টেইন, ঠিক এই বৃত্তের মাঝামাঝিই একটা হ্রদের পানির নীচে একটা সিন্দুক লুকিয়ে রাখা হয়েছে ।
হীরে-জহরৎ আর সোনায় ভর্তি সিন্দুকটা আমিই ওখানে রেখেছিলাম ।
    কর্ণেল, এই যুদ্ধটা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ধরা পড়বো এবং বিচার আমাদের শাস্তি আমাদের হবে সুদীর্ঘ কারাদন্ড ! আমার যা বয়স তাতে জেলের ভাতরেই মৃত্যু হবে । কিন্তু তুমি বয়সে তরুণ-মুক্তি পাওয়ার পরই তুমি প্যারীতে গিয়ে “কিং কোবরা” নামে একটা ক্লাবে গিয়ে তিনটি লোকের সঙ্গে দেখা করবে । তোমাদের এই চারজনের প্রত্যেকের সঙ্গে এমন একটি কাগজের চিরকুট থাকবে, যার দ্বারা ওয়ি তিনজন তোমার আসল পরিচয় জানতে পারবে এবং তোমার পক্ষেও সহজ হবে তাদের চিনে নিতে ।
    ওই ক্লাবের নাম যে “কিং কোবরা” এটা শুধু তোমাদের চারজনের জানা থাকবে । আমার উপদেশ মেনে নিয়ে তুমি যদি মুক্তি পেয়ে “কিং কোবরা” সেই তিনটি লোকের সঙ্গে গিয়ে যোগ দাও, তাহলে ভবিষ্যতে বিরাট এক ধনী লোক হতে পারবে তুমি । কিন্তুই সমস্ত ব্যপারটাই গোপন রাখতে হবে । -- বললেন জেনারেল ।।
    যে চিরকুটটা আমি দিলাম, ওটার কোন দামই নেই, যতক্ষণ না পর্যন্ত ওই তিনটি লোকের দেখা পাও ।”
মেরিলিন লিলি, থামলো ।
রায়হান বলল, “আপানার স্বামীর কাছে সেই চিরকুটটা ছিল ?”
“হ্যা । সেই টুকরো কাগজটা, এটাই জেনারেল দিয়েছিলেন ওকে ।”
টুকরো কাগজটা হলদেটে, অতি সাবধানে কাগজটার ভাঁজ খুলে রায়হান দেখলো, কাগজের মাঝখানে চারটি অক্ষর উপর-নিচে পর-পর সাজানো রয়েছে ।

ঠিক এই ভাবে সাংকেতিক কোন কোডের মতনঃ 
R    E
H   e

 

RitonRH

Comments