এক
৫ জুলাই, রাত ১টা
৩১ জুন,
গাড়ির কর্কশ শব্দে কান ঝালা-ফালা হয়ে যাচ্ছে, এই মামা বামের রাস্তায় ঢুকে পড়ো আর পারছিনা, রিক্সা চালককে বললো রায়হান রশিদ । কেসটার সমাধান হইলে এবার ডাক্তার দেখাবো, আর হেলা-ফেলা নয় । পকেট থেকে একটা চিঠি বের করলো কিছুক্ষন চেয়ে থেকে পড়তে শুরু করলো রায়হান রশিদ । "তুমি এসেছিলে বসন্তে আবার চলেও গেলে বসন্তে আহ, তবে তুমি চলে যাওয়াতে আমার স্বপ্ন পূরণে কোন বাধা নাই ।" কাগজটি মুড়িয়ে রাস্তার পাশে ফেলে দিলো ।
রিক্সা থেকে নেমে একটা গলির ভিতর হাটা শুরু করলো, কয়েক কদম পরেই বামে মুড় নিয়ে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে রইল, এখন রাত ১১ টা এখনই আসার সময় হয়েছে পিচ্ছিটার । পিচ্ছি হচ্ছে রায়হান রশিদের ইনফর্মার যাকে বলে তথ্য সরবরাহ কারী । পিচ্ছির বয়স আনুমানিক উনিশ কি কুড়ি হবে, লম্বায় খাটো তাই পিচ্ছি খেতাব ওর ভালো নাম আমজাদ হোসেন । পিচ্ছিকে যে দিন নাম জিজ্ঞাসা করা হয় তখন সে বলে আমার নাম পিচ্ছি । সেদিন রায়হান হেসে বলেছিল এখনো কি ফিটার খেতে হয় হাহাহহ......
পিচ্ছিঃ স্যার আমার ভালো নামও আছে ।
র রশিদঃ তাই নাকি তো ভালো নাম কি শুনি
পিচ্ছিঃ আমার মায়ে আমারে আমজাদ করে ডাকে, মা মারা যাবার পর থেকে আমি রাস্তায় থাকি ঘুমাই তাই কেউ নাম জিগায়তো না, একটা হোটেলে কাম করতাম হোটেল মালিকে আমারে পিচ্ছি কইত আর কি আমার নাম পিচ্ছি হয়েগেলো ।
র রশিদঃ হুম, বুঝলাম । ঠিক আছে আমি তোমায় আমজাদ হোসেন বলেই ডাকবো ।
পিচ্ছিঃ আচ্ছা স্যার, এহন কন আমার কি কাম করা লাগবো?
র রশিদঃ তুমি এখন থেকে আমার এইখানে কাজ করবা, আমার সাথে খাবা চাইলে আমার এখানেও ঘুমাতে পারো ।
আমজাদঃ আচ্ছা স্যার । আমজাদ এর আজ খুব আনন্দের দিন কারণ অনেক থেকে একটা কাজের জন্য অনেক ঘুরাঘুরি করছে কিন্তু পাচ্ছে না।
র রশিদঃ শুনো আমি তোমায় একটা জাক দিচ্ছি, মনে রাখবা আমি তোমায় চিনি না তুমিও না । কাছে আসো বুঝিয়ে দিচ্ছি ( কানের কাছে ফিসির ফিসির শব্দ)
র রশিদঃ বুজাইতে পারছি ?
আমজাদঃ জ্বী স্যার, আমি তাহলে যাই ।
আজ তিনদিন হইল এখানেই দেখা হবে আমজাদ উরুফে পিচ্ছির সাথে, কিছু খবরের জন্য তাকে পাঠাইতে হইছিল মহাখালির বস্তিতে । রায়হান রশিদ সারা শরিলে কালো কাপরে ঢাকা । শিতের মৌসুম কেউ সন্দেহ করবে না, তাই সুবিধা একটু বেশি পাচ্ছে রায়হান রশিদ ।
আচ্ছা আমজাদ আসতে এতো দেরি করছে কেনো ......?
হঠাৎ গলির ভিতর অন্ধকারে কেউ দাঁড়িয়ে আছে । রায়হান রশিদের ষষ্ট ইন্দ্রিয় বলছে লক্ষণ ভালো না, চিন্তায় ছেদ পড়লো যখন দেখলো সামনে এক লোক পিস্তল হাতে দাঁড়িয়ে আছে কাকে যেনো খুঁজছে । রায়হান এর থেকে পাঁচ হাত দূরেই দাঁড়িয়ে আছে অস্ত্রধারী লোকটি । রায়হান টু শব্দ না করেই দাঁড়িয়ে আছে । হঠাৎ রায়হান দেখলো পিচ্ছি আমজাদ গলীতে না ঢুকে গলির মাথায় দাঁড়িয়ে আছে, আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা গুনা শুরু করলো ।
গলির অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আছে বাজ, অপেক্ষা করছে বস আফতাবের সংকেতের উপর । আজ সে কাউকে মারবে না শুধু ভয় দেখাবে, বেটা কিনা বসের উপর দিয়ে কথা বলে । বস বলে দিয়েছে গলির মাথায় ছিড়া গেঞ্জি পরা ছেলে আকাশের তারা গুনবে সেই সময় চৌধুরী ভিলায় যেতে হবে । বাজের একটা অভ্যাস সে মোবাইল ব্যবহার করে না, মোবাইল নাকি সময় অপচয় যন্ত্র ।
রায়হান রশিদ অন্ধকারের লোকটার কথা ভাবছে কে সে? কি চায় এখানে? কাকে মারতে চায় নাকি হুমকি ?
এই সব প্রশ্নের একটাই সমাধার দেখতে হবে কে সে ? এই মূহর্তে সে এখানে আছে অন্ধকারের লোকটা জানে না, জানলে অবশ্যই রিয়েক্ট করতো । রায়হান সিধ্যান্ত নিলো এই লোকের সাথে পিচ্ছির কানেকশন টা কোথায় । পিচ্ছিত জানে আমি এখানে ও না এসে ওখানে দাড়ালো কেনো, পিচ্ছির সাথে কি ... না না না । মানে পিচ্ছি কি তাকে নাকি অন্ধাকারের সংকেত । জানতে হলে দেখতে হবে কি হয় ।
চলবে ............
Comments
Post a Comment