Skip to main content

ডিটেকটিভ এন্ড মিস লিলি / শেষ পর্ব | Detective and Miss Lily | Last Episode

মোঃ জাহিদুল ইসলাম রিতন 



---শেষ পর্ব---

                শ্যাওলার ঘন একটা স্তর পার হয়ে আরও অনেকটা নীচে নেমে এল রায়হান । গাছের ঝুরির মতন কিছু যেন ছড়িয়ে আছে, আর তারই ফাঁকে ফাঁকে জমাট শ্যাওলা ফণমনসার পাতার আক্রিতি নিয়ে একটা উচু পাথরের চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে । হাতের বর্শাটা দিয়ে তলাটা খুচিয়ে দেখল রায়হান, তারপর বুঝতে পারল, সিন্দুকটা ওই পাথরের নিচেই রয়েছে । মিনিট ছয়েক লাগল তার দড়ি দিয়ে সিন্দুকটা বাধঁতে । চারধার ইস্পাতের বেল্ট দিয়ে আটানো । শ্যাওলায় পিছিল হয়ে আছে সিন্দুকের গা ।
    কিন্তু পল স্টোফার গেল কোথায় ? রায়হান উপরের দিকে উঠে আসতে লাগল । সিন্দুকের দড়িটা কোমরের বেল্টের সঙ্গে আটকে দিয়েছিল । তীরে উঠে আর একটা প্রান্ত বেঁধে দেবে গাড়ীর পেছনে ।
    পানির উপর মাথা তুলেই দেখল ভোর হয়ে আসছে । লেকের ওপারের পাইনের বনের পেছনে পাহাড়ের চূড়োর মাথায় প্রভাতের ফিকে আলোর রেশ । মেরিকিন সেই গাছটার নীচে তেমনি দাঁড়িয়ে আছে লুগারটা উচিয়ে
“সিন্দুকটা খুঁজে পেয়েছি মেরিলিন । আমিই খুঁজে পেলাম ওটাকে ।”
    মেরিলিন বলল, “কিন্তু পল স্টোফার কোথায় ? কি হয়েছে তার ?”
মেরিলিন জানে না এবং সম্ভবত; আন্দাজও করতে পারেনি পল স্টোফারের বিপদটা কী ভাবে ভাগ্যে তাকে এক সাংঘাতিক পরিণতির দিকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল । সিন্দুকটার বেল্টে দড়ি এঁটে দিয়ে রায়হান যখন উপরে উঠে আসছিল, ঠিক সেই সময়টাতেই পল গিয়ে পৌছেছিল সিন্দুকটার কাছে ।  আর তারপরেই পল হঠাৎ টের পেল, অক্সিজেন সিলিন্ডারটা তার পেছন থেকে আলগা হয়ে খুলে গিয়ে আচমকা ফেটে গিয়ে পুরো গ্যাসটাই বেরিয়ে গেল । অগণন বুদবুদের রাজ্যে দিশেহারা হয়ে পল এক সময় এলিয়ে পড়ল তলার নরম বালুন উপরে । তার ডুবুরীর সাজ-সরঞ্জামকে যে কেউ আগে থেকেই নষ্ট করে রেখেছিল এবং তা একটা  বিশেষ গাঢ় উদ্দেশ্য নিয়ে এটা বোঝা গেল, যখন পল অনুভব করল, তার ফ্রগম্যানের পোশাকটার সবগুলো ফিতা আর বোতামই একটু একটু করে ছিন্ন হয়ে যেতে শুরু করল । এ অবস্তায় তার পক্ষে এই অতল জলের গহন ছাড়িয়ে উপরে উঠে যাওয়া এক রকম অসম্ভব ! হ্রদের গভীরতা এখানটায় প্রায় দুশো ফুটের মতন । খানিকক্ষণ পরই পল স্টোফার অজ্ঞান হয়ে গেল । সে মরে গেল ।
    “কিন্তু লোকটার কি হল, তার সন্ধার নিতে তুমি কি আবার নীচে নামবে না রায়হান ?”
“নিশ্চয়”
রায়হান ডুব দিল । হ্রদের মাঝখান পর্যন্ত ডুব-সাতার দিয়ে এগোতে হবে । তারপর অগাথ পানির তলায় নেমে যেতে হবে । কাজটা বিপদজ্জনক, কারণ হ্রদের ভেতরে শ্যাওলার ঘন বিস্তৃতির ভেতরে কাউকে খোঁজা কঠিন । দুশো ফুট পানিতে খোঁজতে হবে পল স্টোফারকে ।
    মেরিলিন প্রতিক্ষা করে আছে । ভুস করে জেগে উঠল রায়হানের মাথাটা । মেরিলিন ছুটে গেল কিনারে । নিজেকে যেন হিঁচড়ে হিঁচড়ে উপরে টেনে তুলল ক্লান্ত রায়হান । তারপর বলল, .পল স্টোফার পানির তলায় মরে পরে আছে মেরিলিন ।  ওর ডুবুরীর পোশাকটাও দেখলাম ছিন্ন ভিন্ন !”
ওহ; কি ভয়ঙ্কর”-মেরিলম ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল, ‘তুমি’ ! তুমিই খুন করেছ তাকে ! না, সরে যাও আমার কাছ থেকে ! না, কিন্তু তাহলে এভাবে অ্যাক্সিডেন্টটা ঘটবে কেন ?
না, তুমি তাকে খুন করোনি ! অন্য কেউ, অন্য কোন লোক......”
দুহাত বাড়িয়ে মেরিলিনকে কাছে টেনে আনল রায়হান, “শান্ত হও একটু স্থির হও মেরিলিন ! ঠান্ডা মাথায় ব্যপারটা ভেবে দেখা যাক ।”
একটু ভেবে সে বলে –অনেক কাজ আছে মেরিলিন । তুমি গাড়ীতে উঠে স্টার্ট দাও, সিন্দুকটাকে টেনে তুলতে হবে ডাঙায় । তারপর ওটাকে নিয়ে আমরা চলে যাব এই নির্জন বনভূমি ছেড়ে ।”
    একটু পরই গাড়ীতে উঠে স্টার্ট দিল মেরিলিন । দড়িতে টান লাগা শুরু হতেই তীরে দাঁড়িয়ে রায়হান দড়িতে হাত লাগিয়ে টানতে সাহায্য করল । খানিকক্ষণ পরই পানির নীচে সিন্দুটটার চেহারা চোখে পড়ল । হেলে দুলে ওঠা উঠে আসছে । গায়ে জড়িয়ে আছে শৈবালদামের জঞ্জাল ।
    রায়হান ঝুঁকে পড়ল নীচ হয়ে ।
“গুপ্তধণের সিন্দুক উঠে আসছে মেরিলিন । এবার নেমে এস !”
মেরিলিন নেমে এল গাড়ী থেকে । রায়হান দাঁড়িয়ে আছে তীরের কাছে । তার পায়ের কাছে গুপ্তধনের সিন্দুক ।
“এই নাও মেরিলিন । সেই সিন্দুকটা ! এখন এই টাকা সবই তমার একার !”
একটু থেমে রায়হান বলে---
“ঠিক এই জন্যেই তো তুমি আমায় ভাড়া করে নিয়ে এসেছিলে মেরিলিন, এখন আমি সব বুঝতে পারছি । সবই পানির মতন স্পষ্ট এখন আমার কাছে । যেদিন তুমি আমায় এ কাজে নিযুক্ত করলে তারপর থেকেই একজন করে খুন হতে শুরু করল । এখন এই গুপ্তধনের শেয়ার নেবার আর কেউ নেই । এ সবই তোমার ।”
    আশ্চার্য্য সুরে মেরিলিন বলল, “তাহলে তোমার কি এইটাই বিশ্বাস যে এসবই ষড়যন্ত্র আমি করিয়াছি ? আমিই কিং কোবরা ?”
রায়হানের গলা সামান্য কেঁপে উঠল, “সম্ভবত; তুমি তোমার স্বামীর কবল থেকে মুক্তি চেয়েছিলে এবং সেটাই প্রথম পদক্ষেপ, ফ্রিজ খুন হল ট্রাকের তলায়, কিংবা নিখোঁজ হল, তারপর এক এক করে অনু অংশীদাররাও খুন হল .....................”
    “তুমি ভুল করছ রায়হান রশিদ ।” –পুরুষ কন্ঠে কে যেন বলে উঠল ।
কাছাকাছি একটা ঝোপের আড়াল থেকে গম্ভীর গলায় কথাটা বলেই একটা মানুষ তাদের সামনে এসে দাঁড়াল । ছ ফুটের উপরে লম্বা, মাথার চুল সবই সাদা, মুখটা ইস্পাতের মতন শক্ত আর হাতে উদ্যত পিস্তল !
    চমকে উটল মেরিলিন । তারপর অস্ফুটে স্বরে বলে উঠল, “এ কি –ফ্রিজ তুমি !”
বোধ হয় আচম্বিতে বজ্রপাত হলেও ওরা এতো চমকে উঠত না ।
    মেরিলিন হতবাক, রায়হান স্তম্ভিত । ফ্রিজের পিস্তল তখনও তাক করা রয়েছে সোজা রায়হানের বুক লক্ষ্য করে । রায়হান বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে আছে ফ্রিজের দিকে । কিন্তু তা কয়েক সেকেন্ডের জন্য । তারপরই সাম্বিৎ ফিরে এল তার ।
ফ্রিজ বলল, “পেছনে সরে দাড়াও মেরিলিন । রায়হান তার কাজগুলো বেশ ভাল ভাবেই করেছে । এইবার নিরিবিলি হ্রদের ধারে জঙ্গলের মধ্যেই রায়হানের ব্যবস্তা করছি আমি”
 
    “কিসের ব্যবস্থা ?” মেরিলিন চমকে চেঁচিয়ে উঠল । ফ্রিজ তার পিস্তলের নল চেপে ধরল রায়হানের বুকে । রায়হান বলল, “এবার সব পানির মত পরিষ্কার আমার কাছে ।  আপনি আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন । আপনি চাই ছিলেন, যাতে জেনারেল জিমারম্যানের পুরো গুপ্তধনটাই আপন একা হাতিয়ে নিতে পারেন । মেরিলিন কে নিয়ে গোটা অভিযানের সময়টায় আপনি আড়াল থেকে সব সময় লক্ষ্য করে যাচ্ছিলেন আমাকে, তারপর যখন ‘কিং কোবরা’ সেই তিনজন মানুষের পরিচয় পাওয়া গেল এবং তাদের চানা গেল, তারপরই আপনি কাজ শুরু করে দিলেন । আপনি খুন করার উদ্দেশ্য প্রথম থেকেই কার্ল মার্ককে শ্লো পয়জন করা শুরু করে দিলেন............তারপর.........”
    “টাট-টাট”! ফ্রিজ তার বাঁ হাতের তর্জনী তুলে একবার ভ্রু বাঁকিয়ে হেসে উঠল ।
তারপর বলল, “শুরুটা  প্রথমেই বলা উচিৎ । আমিই বলছি । ফতুল্লার হাইওয়েতে বেড়াতে যাবার অছিলা করে হাইওয়েতে গিয়া একটা লোককে বেশ কিছু টাকা দিয়া ভাড়া করি প্রথমে, মানে এই হাইওয়েতে পৌছেই দেখা হয়েছিল লোকটার সঙ্গে আমার, লোকটার সঙ্গে পোশাক বদল করে তাকে খানিক পরেই ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিই একটা ট্রাকের সামনে । লোক জানল, আমি মরে গেছি ।
.........তারপর প্যারিসে তোমাদের সেই মিটিং-এর পর অটো বগনারকে আমি নিমন্ত্রণ করে আইফেল টাওয়ারের চূড়োয় নিয়ে যাই । রেলিং-এ দাঁড়িয়ে বগনার যখন খুব খোশগল্পে মেতে উঠেছে সেই সময় ধাক্কা মেরে ফেলে দেই শূন্যে । আমার ধারণা ছিল হয়তো পাখির মতনই উড়ে যাবে আকাশে !
হাঃ হাঃ হাঃ !!!
    ‘কানার ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়েছিল আমার দিকে । আমি যখন বললাম, এস বগনার এবার তুমি তোমার ওই কালো শোকনো-ডানা মেলে উড়ে যাও । -বগনার তখন এটা আমার রসকিতা ভেবে বিকট হেসে উঠেছিল, আর সঙ্গে সঙ্গেই আমি তার শরীরটাকে রেলিং টপকে ছুড়ে দিলাম শূন্যে !!!
“তারপর কার্ল মাকের ব্যপারটা । কার্ল বরাবরই হার্টের রোগীহার্টের অসুখ হলেই মাক এক ধরণের পিল খেত । আমি চুপিসারে তার কামরায় ঢুকে সেই পিলগুলোর বদলে দেখতে একই রকমের কিছু পিল রেখে আসি । এই পিলগুলো বিষাক্ত—একটু দেরিতে কাজ দেয় এই যা ! আর ঠিক অনুযায়ী কার্ল হঠাৎ মরে গেল পল স্টোফারের সঙ্গে গাড়ীতে যেতে পথের মাঝেই ।
তারপর পল স্টোফার । চললাম পল স্টোফারের ঘরে । অন্ধকারে খোঁজে খোঁজে বের করি তার ডুবুরীর আউটফিট । কলকব্জাগুলো অকেজো করে দেই । কাজটা এমন নিখুত করে করেছিলাম যে ওটা পরবার সময় বোঝার কোন উপায় ছিল না যে আউটফিটা ভেতরে অকেজো হয়ে আছে
    ফ্রিজ এবার রহেমে গেল । তারপর রায়হানের দিকে বাঁ হাতের তর্জনী উচিয়ে, ডান হাতের পিস্তল্টা উঁচু করে বলল, “তোমার কাজগুলো বেশ দক্ষতার সঙ্গেই করেছ রায়হান, এখন আমি তোমার ব্যবস্থা করছি ।”
    রায়হান ঠান্ডা গলায় বলে-
“আমার ভূমিকা হল একটি নির্বোধের । হ্যাঁ, মেরিলিন আমার এই করুন নির্বোধের ভূমিকা শুধু তোমারই জন্যে !”
    “কিন্তু রায়হান, ফ্রিজ যে বেঁচে আছে তো আমি কল্পনাও করিনি !” –মেরিলিন বলল ।
ফ্রিজ বলল, “মেরিলিন ভেবেছিল ট্রাকের তলায় যে লোকটা নিহত হয়েছে সে আমিই !”
আমি প্রায় মেরিলিনকে বলতাম, যদি হটাৎ কখনো কিছু ঘটে যায় আমার ভাগ্যে, সে যেন ঠান্ডা মাথায় কাজ করে এবং তমার সঙ্গে যোগাযোগ করে । তুমি নামজাদা গোয়েন্দা !”
    ফ্রিজের দিকে তাকিয়ে এবার মেরিলিন বলল, “কিন্তু ফ্রিজ, তুমি এমন অদ্ভুতভাবে একাজগুলো করলে কে ?”
কঠোর স্বরে ফ্রিজ বলল, “কারণ, আমি জানতাম আমার প্লান অনুযায়ী এভাবে কাজে নামলে তুমি আমার সঙ্গিনী হতে না, বিষেষ করে যে কাজের ভেতরে খুনের ব্যপারটা একান্তই জুরুরী ।”
    মেরিলিন অস্ফুট একটা শব্দ করে ।
ফ্রিজ আবার বলল, “কিন্তু এবার সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে মেরিলিন । আমরা বিরাট বড় লোক হয়ে যাচ্ছি । এখন শুধু একটা কাজই বাকী-ওই বোকা গোয়েন্দাটাকে সরিয়ে সেওয়া !”
    ফ্রিজের পিস্তল ক্লিক করে উঠল ।
মেরিলিন বলে উঠল, “না, ফ্রিজ –ওকে চলে যেতে দাও ! আমি তোমায় ঘৃণা করি-ঘৃণা করি ! তুমি একটা খুনি, ফ্যাসিস্ত, নাৎসী, বর্বর, যুদ্ধের সময় তুমি হাজার হাজার নিরাপরাধ মানুষকে খুন করেছ এবং এখন এই শান্তির সময়ও খুন করে যাচ্ছ !  ওকে চলে যেতে দাও !”
    “তুমি নির্বোধ মেয়ে মানুষ ! তুমি ভুলে গিয়েছ যে তুমি বিয়ে করেছ এস,এস নাজীকে, যার ধর্মই হল শত্রু না রাখা !”
কথাটা বলেই ফ্রিজ ঘুরে দাঁড়ায়ে তাকাল মেরিলিনের দিকে এবং ফ্রিজের এই অন্যমনস্কতার সুযোগ নিতে মূহর্ত মাত্র দেরি করল না রায়হান । ফ্রজ ঘুরে দাঁড়াতেই মেরিলিন ধাক্কা মারল স্বামীকে, রায়হানও সেই মূহর্তে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রচন্ড এক ঘুষি মেরে ফ্রিজকে ফেলে দিল হ্রদের পানিতেফ্রিজ পানিতে পরার সঙ্গে সঙ্গে তার তার হাত থেকে পিস্তলটাও ছিটকে পরে গেল এক দিকে ।
পানির তলায় তলিয়ে গিয়ে দুজনেই হিংস্র এক লড়াইয়ে মেতে উঠল । এই লাড়াই প্রাণ বাঁচানোর লড়াই । জীবন-মরণ যুদ্ধ । কখনো পানির উপরে জড়াজড়ি করে উঠে আসছে দুজনে, আবার ধরে তলিয়ে যাচ্ছে পানির নীচে । পানির চাপে যতক্ষণ পর্যন্ত না ফুসফুস ফেটে যায় ততক্ষণ পর্যন্ত কাউকেই ভেসে উঠতে দেখা গেল না, তারপর এক সময় পানির তোলপাড় স্থির হল, রায়হান ধীরে ধীরে উঠে এল হ্রদের ওপরে ।
    “ফ্রিজ কি মরে গেছে পানির নীচে ?” –মেরিলিন জানতে চাইলো ।
হ্যাঁ, রায়হান বলল, ফুসফুস ফেটে গেছে ! ডুবুরীর সাজ-সরঞ্জাম ছিল আমার শরীরে । তাই বেঁচে গেছি আমি ।”
“হয়তো এইটেই ওর পাওনা ছিল । কিন্তু এখন আমাদের কি করতে হবে ?”
    “এখান থেকে সোজা চলে যাব কর্তৃপক্ষের কাছে । ঘটনার পুরো কাহিনী বলব তাদের, এই গুপ্তধন আমাদের কাছে রাখতে চাই না আমি । কলঙ্কের দাগ রয়েছে এই টাকায় । অত্যাচারী ফ্যাসিস্ট নাৎসি বর্বর গুলো অসহায় বন্দীদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে এই টাকা জমিয়েছে ।”
অবাক চোখে তাকাল মেরিলিন । বলল “কিন্তু রায়হান, কেউই তো এর কিছু জানতে পারছে না । আমরা বিরাট বড় লোক হয়ে যাবো । কত কষ্ট করতে হয়েছে এর জন্যে .........”
    “না, মেরিলিন !” রায়হান বলল, “আমি বরং মনে করি আমার এই প্রাইভেট ডিটেকটিভ পেশাটাই বেশী লোভনীয় । অন্তত; কলঙ্কিত কোন ঐশ্বর্য ভোগ করে ধনী হওয়ার চেয়ে আমার ডিটেকটিভের কাজ অনেক ভালো ।”
    মেরিলিন হঠাৎ শান্ত হয়ে যায় । বলে, তোমার কথাই ঠিক, রায়হান ।
মেরিলিন এবার জড়িয়ে ধরে রায়হানকে । চুমু খায় ঠোঁটে ঠোঁট রেখে । তারপর মৃদ হেসে বলে, “যদি এই তোমার ইচ্ছা তাহলে যেনে নাও আমারও তাই ইচ্ছা, রায়হান ! মিসেস ডিটেকটিভ হতে এখন আর আমার কোন আপত্তি নেই ।”
    রায়হান মৃদ হাসল । বিজয়ীর অহংকারী হাসি ।
গুপ্তধনের সিন্দুকটা পৌঁছে দিল সেই দিনই দুপুরে জার্মান সরকারের জিম্মায় ।
তারপর ওরা প্যারিসের দিকে গাড়ী স্টার্ট দিল ।

----------------
RitonRH




Comments

Post a Comment